2013-12-16

ডেস্ক রিপোর্ট,১৬ ডিসেম্বর'১৩:

১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। বিজয়ের ৪২ বছর পূর্তি। ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে পাওয়া বিজয়ের দিন  ভোরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টার ঠিক পরেই বীর সন্তানদের সম্মান জানাতে সাভারে অবস্থিত জতীয় স্মৃতিসৌধে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রী পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। এর পর তারা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।

ছয়টা ৪৩ মিনিটে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে নেতা-কর্মীদের নিয়ে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা। পরে স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী।  পরে শহীদদের উদ্দেশে ১৪-দলের নেতা-কর্মীরা, তিন বাহিনীর প্রধান ও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের শ্রদ্ধা জানানো শেষে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে নামে জনতার ঢোল। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে স্মৃতিসৌধের বেদিমূল।

সকাল আটটা পাঁচ মিনিটে বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তাঁর সঙ্গে দলীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয়ের দিনটিতে আনন্দের পাশাপাশি বেদনাও বাজবে বাঙালির বুকে। বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় জাতি স্মরণ করবে জানা-অজানা সেসব শহীদকে।

যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল ভোগ করে পেরিয়ে গেল ৪২ বছর। কিন্তু যারা সেই সংগ্রামের উত্তাল দিনে জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে হাত মিলিয়েছিল ঘাতক পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে, সেই রাজাকার-আলবদরদের বিচার না করার কলঙ্ক যেন অনেকটাই ম্লান করেছিল জাতির এই শ্রেষ্ঠ অর্জনকে। দিনে দিনে গণদাবিতে পরিণত হয়ে ওঠা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ অবশেষে শুরু হয়েছিল স্বাধীনতার মাস ২০১০ সালের মার্চে।

এ বছর ‘মিরপুরের কসাই’ বলে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করায় সেই কলঙ্কের দায় মুক্তির সূচনা ঘটেছে। জাতির বিজয়ের আনন্দে যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা। তবে জাতীয় সংসদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে বিদ্যমান অস্থির পরিস্থিতি এবং যুদ্ধাপরাধের সাজা কার্যকর করার পর থেকে সারা দেশে জামায়াত-শিবিরের সহিংস তত্পরতা সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। এ পরিস্থিতিতেই পালিত হচ্ছে এবার বিজয় উৎসব।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সেখানে রাখা বইয়ে স্বাক্ষর করেন। পরে সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য স্মৃতিসৌদ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথেই সেখানে মানুষের ঢল নামে।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন সাভার স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সূর্যোদয়ের সাথে সাথে দেশের সকল শহীদ মিনারে শহীদদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে।

বিজয় দিবসকে ঘিরে সারা ঢাকা শহরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া হেলিকপ্টারে শহর জুড়ে র‌্যাবের টহল রয়েছে।

Show more